গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা

 
 সারা বিশ্বে গ্রীন টি এর জনপ্রিয়তা নতুন ভাবে বলার অপেক্ষা রাখেনা।এর গুনাগুণই সবার কাছে এর জনপ্রিয়তাকে ধরে রেখেছে।যদিও সকলের কাছে এর জনপ্রিয়তা বিশেষত ওজন কমানোর উপকরণ হিসেবেই বেশি।তবে এর নানাধরণের উপকারিতা বিদ্যামান।কিন্ত গ্রিন টি এর এত উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও এর বেশ কিছু অপকারিতা ও রয়েছে। তাই আজ আমরা আলোচনা করব গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বেশ কিছু অজানা তথ্য অজানা।
গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা


আমরা অনেকেই মনে করি গ্রিন টি শুধু ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া গ্রিন টি খালি পেটে খাওয়া বেশি উপকারী। তাছাড়া অনেকের কাছে গ্রিন টি শুধু উপকারী পানীয় হিসেবে বিবেচ্য। তবে জেনে রাখা উচিত প্রত্যেকেরই উপকারী এবং অপকারী উভয়দিকে বিদ্যমান। আজকে আমরা জানবো গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কীয় দিক সমূহ। 

সূচিপত্রঃগ্রীন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা

ভূমিকা

পৃথিবীতে নানা ধরনের পানীয় রয়েছে। মানুষ ভেদে অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর বেশ কিছু অপকারী আবার কিছু কিছু পানিও রয়েছে যেগুলো অত্যন্ত উপকারী হিসেবেই পরিচিত। তেমনি একটি পানীয় হচ্ছে গ্রিন টি। ওজন কমানো থেকে শুরু  করে ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গ্রীন টি এর জুড়ি মেলা ভার।

 গ্রিন টি যেমন অত্যন্ত সহজলভ্য এবং তেমনি এর গুনাগুনের জন্য সকলের কাছে সমাদৃত ও বটে। গ্রিন টি খাওয়ার নানা উপকারিতা এবং অপকারিতা জেনে নিয়ম অনুযায়ী গ্রিন টি পান করলে ূপ আশানুরূপ ফল পাওয়া সম্ভব খুব সহজেই। তাই আসুন আমরা গ্রিন টি এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।

 গ্রিন টি খাওয়ার উপকারিতা

যদিও ওজন কমানোর পানীয় হিসেবে গ্রিন টি বেশি পরিচিত তবে এর উপকারিতা আরো নানা দিক থেকে বিবেচনা করা হয়। যেমনঃ
ওজন কমাতেঃ ক্যালরি ্ন বার্ন করে দেহের চর্বি জমা থেকে রক্ষা করে গ্রিন টি। যা ওজন নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ক্যান্সার ঝুঁকি কমাতেঃ ক্যান্সারের মতো অত্যন্ত কঠিন রোগ থেকে রক্ষা পেতে গ্রিন টি এর কথা না বললেই নয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ গ্রিন টি দেহের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও সাহায্য করে।
ত্বকের সৌন্দর্য বর্ধনেঃ গ্রিন টি সৌন্দর্য বর্ধনের সাহায্য করে। কেননা গ্রিন টি নিয়মিত পানে ত্বকে টানটান ভাব তৈরি হয় এবং ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়।
দাঁতের যত্নেঃ গ্রিন টি দাঁতের যত্নে এক অনন্য উপাদান। দাঁত সুন্দর রাখতে গ্রিন টি এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। 
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে গ্রিন টি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেঃ নিয়মিত গ্রীন টি পানে কমতে পারে হৃদরোগের ঝুকিও।
উদ্বিগ্নতা কমাতেঃ গ্রিন টি উদ্বিগ্নতা কমাতে সাহায্য করে।
শরীরের সতেজতা বৃদ্ধিতেঃ গ্রিন টি শুধু ত্বকের সৌন্দর্য বর্ধনই নয় বরং শরীরের সতরতা বৃদ্ধিতেও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
ব্রেনকে কার্যকর করতেঃ গ্রীন টি পানের অভ্যাস ব্রেনকে কার্যকরী করে গড়ে তুলতে সহযোগিতা করে।
ডিপ্রেশন দূর করেঃ অনেকাংশে ডিপ্রেশন থেকে দূরে রাখে গ্রিন টি।

গ্রীন টি বানানোর নিয়ম

অন্যান্য চায়ের মতই গ্রিন টি বানানোর অত্যন্ত সহজ। খুব সাধারণ নিয়ম অনুসরণ করে গ্রিন টি বানানো যায়। আসুন তবে জেনে নেওয়া যাক গ্রিন টি বানানোর নিয়মাবলী। গ্রিন টি বানাতে একটি পাত্রের পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি নিন।
 পাত্রসহ পানিগুলো একটি চুলায় বসিয়ে পানি ফুটন্ত হয়ে আসলে পছন্দসই কোন কাপ বা মগে পানিগুলো ঢেলে নিন এবং তাতে যোগ করুন গ্রিন টি পাউডার অথবা টি ব্যাগ। দুই তিন মিনিট পাত্রটির ঢাকা দিয়ে রাখুন। ব্যাস হয়ে গেল গ্রিন টি যা পানের একেবারে উপযোগী।গ্রীন টির সঙ্গে আপনার পছন্দমত যুক্ত করতে পারেন লেবু, লবঙ্গ, আদা, গরম মসলা ইত্যাদি।

ওজন কমাতে গ্রিন টি খাওয়ার নিয়ম

অনেকেই ধারণা করেন ওজন কমাতে গ্রিন টি সকালবেলা খালি পেটে খাওয়া ভালো। এ ধারণা পুরোপুরি সঠিক নয়। বরং গ্রিন টি খাওয়ার সঠিক নিয়মটি হলো খাবারের মাঝে মাঝে সময় গ্রিন টি পান করা।
প্রতিদিন ব্যায়াম করার আগে গ্রিন টি খাওয়া উপযোগী। তবে তার জন্য অবশ্যই হালকা কোনো খাবার খেয়ে অতঃপর গ্রিন টি পান করা উচিত।

গ্রিন টি খাওয়ার সময়

গ্রিন টি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো খাবারের মাঝামাঝি সময় খাওয়া। তা হতে পারে সকালে বা দুপুরে। তবে মনে রাখতে হবে গ্রিন টি কখনই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। এটা স্বাস্থ্যঝুঁকির প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়।

দিনে কত কাপ গ্রিন টি খাওয়া উচিত

অনেকে ধারণা করেন গ্রিন টি যেহেতু উপকারী সেহেতু ইচ্ছামত গ্রিন টি পান করলে কোন ক্ষতি নেই। তবে এর কোন ভিত্তি নেই । বরং গ্রিন টি দিনে দুই থেকে তিন কাপ পান করে উত্তম । তাছাড়া হিপে বরং বিপরীত হতে পারে।

সকালে খালি পেটে গ্রিন টি খেলে কি হয়

ওজন কমাতে অনেকেই খালি পেটে গ্রিন টি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। কিন্তু এটি একটি ভুল পদ্ধতি তো বটেই এ পদ্ধতিতে গ্রিন টি পান করলে শরীরে ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ক্ষতি। ওজন কমাতে সকালে কখনোই খালি পেটে গ্রিন টি পান করা উচিত নয়। বরং গ্রিন টি পান করার পূর্বে হালকা খাবার খেয়ে নেওয়া উত্তম।

কোন গ্রিন টি ভালো

আজকাল বাজারে অনেক ফ্লেভারের গ্রিন টি পাওয়া যায়। তবে সবচেয়ে ভালো গ্রিন টি হল অর্গানিক গ্রিন টি। যার ফলাফলের দিক থেকে অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত এবং উপকারী।

গ্রীন টি এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

গ্রিন টি শরীরের নানা উপকার সাধন করলেও এর মারাত্মক কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। যদি তা অতিরিক্ত পরিমাণে পান করা হয়। এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হলঃ
  • অতিরিক্ত গ্রিন টি পানে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • উদ্বিগ্নতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • অতিরিক্ত গ্রীন টি পানে ক্ষুধা মন্দার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • ডিহাইড্রেশন এর সমস্যা ও দেখা দিতে পারে।
  • কোন রোগের ঔষধ চলাকালীন গ্রিন টি এর পান সেই ওষুধের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
  • গর্ভাবস্থায় গ্রীন টি পান করতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ায় উত্তম।
  • অনেক সময় ডায়াবেটিসের সমস্যায় গ্রিন টি ঠিক কতটুকু খাওয়া যাবে তা ডাক্তারের পরামর্শ থেকে জেনে নিতে হয়।
  • অধিক পরিমাণে গ্রিন টি পান লিভার ক্ষতি কারণ ও হয়ে থাকে।
  • আয়রনের ঘাটতি জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে অধিক গ্রিন টি পানি।
  • গ্রিনটিতে যেহেতু ক্যাফেইন থাকে তাই অত্যাধিক গ্রিন টি সেবনে অনেকের মাথা ব্যথার সমস্যা ও দেখা দেয়।
  • অনেক সময় পেটের নানা রকম সমস্যা যেমন এসিডিটি ইত্যাদির সমস্যা দেখা দেয় এই গ্রিন টির ফলে।

সারকথা

পরিশেষে বলা যায় গ্রিন টি নিঃসন্দেহে অনেক উপকারী একটি পানীয় একথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে মনে রাখতে হবে কোন কিছুই প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভালো নয়। এতে বরংবিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে নিয়ম মেনে নিয়মিত গ্রিন টি পান আপনাকে দিতে পারে একটি সুস্থ সুন্দর এবং স্বাস্থ্যকর শরীর। যা ওজন কমানোর সাথে সাথে আপনার দেহ ও মনকে রাখবে সতেজ ও চনমনে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪